1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারতের উন্নয়নে জার্মানি

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৬ অক্টোবর ২০১৫

জার্মান চ্যান্সেলার ম্যার্কেলের ভারত সফরে এই ছবিটাই উঠে এলো৷ সই হলো দু'দেশের মধ্যে ১৮টি সমঝোতাপত্র, যার শীর্ষভাগে আছে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অপ্রচলিত বিদ্যুৎশক্তি, তথ্য-প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা আর সন্ত্রাসবাদ রোধ ইত্যাদি৷

Indien Merkel und Premierminister Modi im Bosch Ausbildungszentrum in Bangalore
ছবি: Getty Images/AFP/M. Kiran

ভারত-জার্মান সম্পর্ক সময়ের কষ্টিপাথরে যাচাই করা হয়ে গেছে গত ৬০ বছর ধরে৷ ইতিমধ্যে গঙ্গা ও রাইন নদীতে অনেক জল বয়ে গেছে৷ দু'দেশে সরকার বদল হয়েছে, শাসক দল বদল হয়েছে, কিন্তু বন্ধন রয়েছে অটুট৷ বরং উত্তোরত্তর সেই বন্ধন হয়েছে আরও মজবুত৷ ভারত ও জার্মানি একে হয়ে উঠেছে অপরের পরিপূরক৷ তাই ভারত-জার্মান তৃতীয় আন্তঃসরকার আলোচনা বৈঠকে যোগ দিতে জার্মান চ্যান্সেলার আঙ্গেলা ম্যার্কেলের তিন দিনের ভারত সফর নানা দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ৷ টুইটারেও উঠে এসেছে এর নানা দিক৷

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আঙ্গেলা ম্যার্কেল দু'দফায় দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন, দিল্লিতে এবং ব্যাঙ্গালুরুতে৷ ব্যাঙ্গালুরুতে তথ্য-প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী জার্মানির প্রতি ‘মেক-ইন-ইন্ডিয়া' এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ পার্টনার হয়ে ওঠার ডাক দেন৷ বলেন, বর্তমান বিশ্বে যে মন্দাবস্থা চলেছে তার প্রেক্ষিতে ভারত বিদেশি লগ্নির উজ্জ্বল গন্তব্য৷ বিশেষ করে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে ভারতে৷ আর তার জন্য বিদেশি লগ্নির অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে নানা রকম সুবিধা দেবার কথাও বলেন তিনি৷ যেমন, মেধাস্বত্ত্ব সুরক্ষা, পণ্য ও পরিষেবা করের সুবিধা ইত্যাদি৷

ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রসঙ্গে মোদী বলেছেন, ভারতের সফটওয়্যার উদ্ভাবনী প্রতিভা বিশ্বের হার্ডওয়্যার শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে সন্দেহ নেই৷ বলা বাহুল্য, জার্মানির ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞান এবং ভারতের তথ্য-প্রযুক্তির উদ্ভাবনী শক্তির সহযোগিতা ছিল ব্যাঙ্গালুরু সম্মেলনের প্রধান ‘থিম'৷ নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে ম্যার্কেলের সফর নিয়ে টুইটও করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী৷

এর আগে গত সোমবার দিল্লিতে একক এবং প্রতিনিধি পর্যায়ের বৈঠকের পর, এক যৌথ বিবৃতিতে মোদী বলেন, জার্মানির শক্তি আর ভারতের অগ্রাধিকার একজোট হয়ে এক নতুন অর্থনৈতিক বিবর্তনের পথ প্রশস্ত করবে৷ শুধু তাই নয়, মেক-ইন-ইন্ডিয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ শরিক দেশ জার্মানি৷ তাই সই হয়েছে ১৮টি সমঝোতা চুক্তিপত্র, যার অন্যতম হলো ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, গ্রিন এনার্জি, উচ্চশিক্ষা, তথ্য-প্রযুক্তি, রেলওয়ের আধুনিকীকরণ, নিরাপত্তা, সন্ত্রাস প্রতিরোধ, স্কিল-উন্নয়ন ইত্যাদি৷ আগামী দিনে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মঞ্চে, বিশেষ করে আগামী ডিসেম্বরে প্যারিসে জলবায়ু চুক্তির প্রেক্ষিতে, ভারত-জার্মান যাতে একই সুরে কথা বলে সেবষয়েও সহমত হয় এই দুই নেতা৷ পরিবেশ সুরক্ষায় সৌরশক্তির মতো গ্রিন তথা নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎশক্তি উত্পাদনে ভারতকে প্রায় ১০০ কোটি ইওরো আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সাহায্য দিতে চেয়েছে জার্মানি৷ কারণ পরমাণু বিদ্যুৎশক্তির ওপর আর আস্থা নেই জার্মানির৷ তারা মনে করে, পরমাণু বিদ্যুৎ উত্পাদন আর্থিক দিক থেকে আর লাভজনক নয়৷ তার সঙ্গে পরমাণু অস্ত্র প্রসার সমস্যা এবং পরমাণু কেন্দ্রে দুর্ঘটনা ও বর্জ পদার্থ অপসারণের দুশ্চিন্তা তো আছেই৷

জার্মান চ্যান্সেলারের সঙ্গে এসেছেন শীর্ষ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল, যার মধ্যে আছেন চারজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী৷ তবে ভারতে জার্মান লগ্নি প্রসঙ্গে একটা অসন্তোষের কথা বারংবার উঠেছে৷ আর সেটা হলো অনুকূল বাণিজ্যিক পরিবেশের জন্য লালফিতার ফাঁস আলগা করতে হবে৷ ভারতের তরফে মোদী সরকার জামার্ন লগ্নির জন্য ‘ফাস্ট-ট্র্যাকের' সুবিধা দিতে রাজি হয়েছে৷ বলেছে আমলাতান্ত্রিক বিধিনিষেধ সহজ সরল করার কথাও৷ উল্লেখ্য, ভারতে বর্তমানে প্রায় ১৬০০টি জার্মান কোম্পানি কাজ করছে, যার মধ্যে ৬০০টি ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে৷ দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ ২০১৪ সালে ছিল প্রায় ১৮০০ কোটি ইওরো৷ শুধু তাই নয়, ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বাস্তবায়নের লক্ষে নতুন উদ্যোগের কথাও বলা হয়েছে৷ সেক্ষেত্রে ইউরোপের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে জার্মানির ভূমিকা অনস্বীকার্য৷

মোদী সরকার আসার পর ভারত ও জার্মানির মধ্যে ভারতীয় স্কুলগুলিতে জার্মান ভাষার পঠন-পাঠন নিয়ে একটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল৷ এই সফরে তা দূর হয়েছে৷ স্থির হয় ভারতের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলিতে ত্রিভাষা সূত্রের অধীনে জার্মান ভাষা আগের মতোই থাকবে৷ পাশাপাশি জার্মানির স্কুলগলিতেও হিন্দি ভাষা চালু করা হবে৷ চ্যান্সেলার ম্যার্কেল মোদীর হাতে ভারত থেকে পাচার হওয়া প্রাচীন একটি দুর্গা মূর্তি তুলে দেন, যেটি এতদিন রাখা ছিল স্টুটগার্ট মিউজিয়ামে৷ আসন্ন দুর্গা পূজার মরশুমে এটাকে এক শুভচিহ্ণ বলে মনে করছে সবাই৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ