1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিএনপিকে ‘নির্মূল করতেই’ কি এত মামলা?

২ এপ্রিল ২০১৯

একটি দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা৷ সেসব মামলার অনেকগুলোর আসামি আবার অজ্ঞাত৷ মানে চাইলে যে কাউকেই সেসব মামলায় গ্রেপ্তার করা যেতে পারে৷ এভাবে মামলার পর মামলা দিয়ে দলটিকে কি ‘শেষ' করে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে?

ছবি: picture-alliance/Xinhua News Agency

একটি দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা৷ সেসব মামলার অনেকগুলোর আসামি আবার অজ্ঞাত৷ মানে চাইলে যে কাউকেই সেসব মামলায় গ্রেপ্তার করা যেতে পারে৷ এভাবে মামলার পর মামলা দিয়ে দলটিকে কি ‘শেষ’ করে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে?

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর৷ দলটির শীর্ষ নেতা যখন ‘দুর্নীতির দায়ে’ কারাভোগ করছেন, আর ভবিষ্যতে যিনি দলটির হাত ধরবেন বলে ধারণা করা হয়, তিনি দেশান্তরী, তখন আলমগীরই যতটা সম্ভব দলটি ধরে রাখার চেষ্টা করছেন৷

বিএনপির এই মহাসচিব একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত৷ চরম প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও শান্ত থেকে নিজের দলকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন তিনি৷ সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের পথ বেছে নিয়েছিলেন আলমগীর৷ তাতে অবশ্য দলটির সংকট কাটেনি৷ বরং একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি ভুল করেছে বলে যাঁরা মনে করেন, তাঁরা এই ভুলের জন্য আলমগীরকেই দায়ী করেন৷  

জাতীয় নির্বাচনের আগে থেকে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, অনেকে কারাভোগ করেছেন৷ খোদ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধেও অন্তত ৪৬টি মামলা হয়েছে৷ তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আপনার দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যে এত মামলা দেয়া হয়েছে, সেটার কারণ কী? জবাবটা তিনি এক কথাতেই দিয়েছেন: ‘বিএনপিকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে এত মামলা করা হয়েছে, হচ্ছে৷'

কিছুদিন আগেই গণমাধ্যমকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, গত এক দশকে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রায় লাখখানেক মামলা দায়ের করা হয়েছে৷ এসবের আসামি ২৫ লাখের মতো মানুষ

আলমগীরের দেয়া এই পরিসংখ্যান স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি৷ তবে শুধু সর্বশেষ নির্বাচনের আগ অবধি একবছরের পত্রিকা ঘাঁটলেই দেখা যায় কীভাবে অসংখ্য মামলায় জড়ানো হয়েছে বিএনপির নেতা, কর্মী, সমর্থকদের৷ নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি এমন হয়েছিল যে গ্রেপ্তারের ভয়ে অনেক বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে রাজপথে নির্বাচনি প্রচারণা চালানোও সম্ভব হয়নি৷ শুধু প্রার্থী নন, সুযোগ পেলে তাদের আশেপাশের মানুষদেরও নানা মামলায় গ্রেপ্তারে কার্পণ্য করেনি পুলিশ৷ দলটির মোটামুটি পরিচিত নেতাকর্মীদের পক্ষে নির্বাচনের সময় নিজ বাড়িতে ঘুমানো পর্যন্ত সম্ভব হয়নি৷ এভাবে নির্বাচনের আগে রাজনীতির মাঠ মোটামুটি বিএনপি শূণ্য করে দিতে সক্ষম হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, যার পুরো সুবিধা পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল৷

ঢাকায় নির্বাচনের আগের কয়েকদিন দেখেছি ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা হাজার হাজার কর্মী সমর্থক নিয়ে বর্ণাঢ্য নির্বাচনী মিছিল করছেন৷ তাদের পোস্টারে ঢেকে গিয়েছিল ঢাকা শহর৷ অথচ বিএনপির একটি পোস্টার অবধি খুঁজে পাওয়া ছিল দায়৷ ধানমন্ডি এলাকায় শুধু একটি রিকশায় একটি মাইকে করে বিএনপির এক প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা শুনেছিলাম, তাও খুব স্বল্প সময়ের জন্য৷

বাংলাদেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর এখন মামলার পাহাড় বলা যায়৷ মির্জা ফখরুল ইসলামের সঙ্গে শুক্রবার যখন ফোনে কথা হয়, তখন তিনি জানালেন বিএনপির বিরুদ্ধে যত মামলা করা হয়েছে তারমধ্যে পঁচিশ হাজারের মতো আছে ‘গায়েবি মামলা'৷ সেসব মামলায় আসামির সংখ্যাও লাখ দশেকের মতো হবে বলে মনে করেন তিনি৷ দলটির অনেক নেতাকর্মীর এখন সময় কাটে আদালতে হাজিরা দিয়ে আর আগাম জামিন নেয়া নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করে৷

আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে

এসব গায়েবি মামলা নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক প্রতিবেদন হয়েছে৷ মূলধারার পত্রিকাতেই খবর প্রকাশ হয়েছে যে অনেকগায়েবি মামলার অভিযোগগুলো প্রায় একইধরনের৷ কিন্তু বাস্তবে সেসব ঘটনা ঘটেছে এমন প্রমাণ নেই৷ ঢাকায় এরকম কয়েকটি ঘটনা অনসুন্ধান করে দেখেছেন সাংবাদিকরা৷ কিন্তু বাস্তবে এমনটা ঘটেছে, সে প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷

শুধু তাই নয়, অনেক মামলায় এমন এমন ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে যাঁরা ঘটনার সময় দেশে ছিলেন না, কিংবা তাঁরা শারীরিকভাবে কোনো ধরনের সহিংসতায় অংশ নিতে সক্ষম নয়৷ এমনকি মৃতব্যক্তিদেরও নানা মামলায় আসামি করার খবর গণমাধ্যমেই প্রকাশ হয়েছে৷

বলছি না বিএনপির সব নেতাকর্মী ধোয়া তুলসি পাতা৷ মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি করার অভিযোগ অতীতে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে উঠেছিল, এখন বিএনপির বিরুদ্ধে উঠছে৷ এধরনের অপরাধ যে দলের সদস্যরাই করুক, তাদের বিচার হওয়া অত্যন্ত জরুরি৷ কিন্তু সেই অপরাধের পরিধি এতটাই বিস্মৃত নয়, যে লাখ লাখ মানুষ তার জন্য দায়ী হবেন৷ সুনির্দিষ্ট অপরাধের বিচার হোক, কিন্তু ‘গায়েবি মামলায়’ অসংখ্য মানুষকে যখন অপরাধী করার চেষ্টা করা হয় তখন সেটাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতই মনে হয়৷​​​​​​​

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ