1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সিপিএমে এআই সঞ্চালিকা, যুব প্রার্থীদের গুরুত্ব

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
২৭ মার্চ ২০২৪

লোকসভা নির্বাচনে অভিনব প্রচার পরিকল্পনা করেছে সিপিএম। এআই সঞ্চালিকা তাদের প্রচার করবেন। প্রার্থী করা হয়েছে যুব নেতাদের।

ব্রিগেডের সভায় ভাষণ দিচ্ছেন সৃজন ভট্টাচার্য।
সিপিএমের যুব প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। এবার প্রার্থীতালিকায় যুবদের প্রাধান্য দিয়েছে দল। ছবি: Subrata Goswami/DW

আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে বামপন্থি দল সিপিএম। তারা এবার প্রচার .এআই বা কৃত্রিম মেধার সাহায্য নিচ্ছে। তাদের প্রচারের সঞ্চালিকা এবার এআই নারী ।

সিপিএম এই এআই সঞ্চালিকার নাম দিয়েছে সমতা। তিনি প্রতিদিন খবর পড়বেন। সেখানে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা বলবেন। বিচার-বিশ্লেষণ করবেন। সামাজিক মাধ্যমে 'ফোকাস অন বেঙ্গল' নামে একটা অনুষ্ঠান প্রচার করবে সিপিএম। তার সঞ্চালিকা হবেন সমতা। প্রথমে এই খবর হবে ইরাজিতে। তবে বাংলাতেও খবর করার ভাবনা আছে।

এই পুরো ধারণাটা দলের  যুব কর্মীদের। তারাই এআইয়ের মাধ্যমে খবর প্রচারের ব্যবস্থা করছেন। তারাই পুরো দায়িত্বে আছেন। নিজেরাই প্রযুক্তির দিকটা সামলাচ্ছেন। বস্তুত এবার লোকসভা ভোটে সিপিএমে যুবদেরই প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। শুধু যুবদের পরিচালনায় এআই সঞ্চালিকা খবর পড়বেন তাই নয়, প্রার্থী হিসাবেও যুবদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে।

গত ১৩ বছর ধরে সিপিএমের মধ্যে ধীরে হলেও নতুন মুখদের নিয়ে আসা হয়েছে। কিছুদিন আগে ব্রিগেডে ডিওয়াইএফআই-এর ডাকা জনসভা সফল হয়েছে। প্রচুর মানুষ এসে ব্রিগেড ভরিয়ে দিয়েছেন। তারপর এবার প্রার্থীদের নামের ক্ষেত্রেও যুবরা প্রাধান্য পেয়েছে। তারা সিপিএমে নতুন হাওয়াও বইয়ে দিয়েছেন।

প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''ব্রিগেডে দেখা গেছে, রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে সভার সূচনা হচ্ছে। লাল পতাকার থেকেও উপরে স্থান পেয়েছে জাতীয় পতাকা। এসব সিপিএমের মতো বাম দলে আগে ভাবা যায়নি। নতুন প্রজন্মের নেতারা অনেককিছু বদলে দিচ্ছেন। গোঁড়ামি বর্জন করছেন।''

সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা দরকার। সিপিএমের যুবরা সেটাই করছেন। ফলে সময়ের সঙ্গে থাকার লাভ আজ না হয় কাল তারা পাবেন। যে সিপিএম একসময় সরকারি অফিস ও ব্যাংকে কম্পিউটার চালু করার বিরেধিতা করেছিল, তারা এখন এআই সঞ্চিলাকার সাহায্যে প্রচার করছে। এটাই য়ুবদের চিন্তার ফল।''

যুব প্রার্থীরা

সিপিএমের এপর্যন্ত ঘোষিত ১৭ জন প্রার্থীর মধ্যে পাঁচজন বাদে ১২ জনই নতুন প্রার্থী। তাদের অধিকাংশই যুব প্রার্থী। তাই শতাংশের হিসাবে ৭০ শতাংশ প্রার্থীই নতুন।

পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছর রাজত্ব করার পর ক্ষমতা হারানোর পর থেকে সিপিএমের অবস্থাটা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না। গত বিধানসভায় তারা একটা কেন্দ্রেও জয়ী হতে পারেনি। গত লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিপিএমের একজনও জিততে পারেননি। ২০১১ থেকেই দলের মধ্যে বারবার একটা বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে, তা হলো, দলের বয়স্ক নেতাদের জায়গায় যুব ও নতুন মুখদের নিয়ে আসেত হবে।

যাদবপুরে সিপিএম প্রার্থী করেছে সৃজন ভট্টাচার্যকে। সিপিএমের এই যুব নেতা ছাত্র-রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। তিনি এসএফআই-এর নেতা ছিলেন। তিনিও দোলের দিন আবিরের থালা হাতে প্রচারে নেমে পড়েছিলেন। এরকম দৃশ্য বামেদের মধ্যে বেশি দেখা যায়নি। খেলার মাঠ থেকে বাজার, সব জায়গায় দেখা যাচ্ছে সৃজনকে।

শ্রীরামপুরে সিপিএম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর। কোনো বড় গাড়ি নয়, হুডখোলা টোটো নিয়ে প্রচারে যাচ্ছেন তিনি। সোজাসাপটা কথা বলছেন। জেএনইউ-তে এবার সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই সবকটি আসনে জিতেছে। সেই জয়ের প্রসঙ্গ তুলে আনছেন। বলছেন, লাল ঝড় আবার আসবে। দীপ্সিতারা নতুন মুখ। তাদের কথা অন্তত মানুষ শুনছে।

সিপিএমের যুব সংগঠনের ব্রিগেড মিটিংয়ের স্লোগান ছিল, যৌবনের ডাকে, জনগণের ব্রিগেডে।ছবি: Subrata Goswami/DW

শুভাশিস মনে করেন, ''এভাবে যুবদের নিয়ে আসায় দলের দীর্ঘমেয়াদী লাভ হতে পারে। সিপিএমে সবসময় পক্ককেশদের ভিড় ছিল। গৌতম দেবের মতো নেতারা বলতেন, মন্ত্রিসভা বা দলের বৈঠকে কী বলব বলুন তো। সবই তো পাকা চুল। সেই মানসিকতা থেকে সরে এসে যুবদের এরকম গুরুত্ব দেয়া আগে কমই হয়েছে।''

এভাবেই তমলুকে প্রার্থী করা হয়েছে সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি সামাজিক মাধ্যমে পরিচিত মুখ। পেশায় আইনজীবী। এই প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়েছেন। যুব-তরুণদের ভাষা বোঝেন, বলেন। নাছোড় মনোভাব নিয়ে ভোটে প্রচার করছেন।

সাংবাদিক আশিস গুপ্ত ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, ''নতুন মুখ না আনলে রাজনৈতিক দল শেষ হয়ে যায়। প্রবীণ বাম নেতাদের আর কিছু দেয়ার নেই। তাদের সঙ্গে বর্তমান প্রজন্মের নেতাদের চিন্তাভাবনায় অনেক পার্থক্য। এই যে সিপিএম এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো সঞ্চালিকার মাধ্যমে প্রচার করছে, তা আগে ভাবা যেত। নতুন ছেলেমেয়েরাই তো এটা করেছে।''

শুভাশিস জানিয়েছেন,. ''একসময় সিপিএমে প্রমোদ দাশগুপ্ত  একঝাঁক যুব নেতাকে তুলে এনেছিলেন। অনিল বিশ্বাস, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যরা তাই পরবর্তীকালে দল ও প্রশাসনের শীর্ষে উঠতে পেরেছিলেন।  তার অনেকদিন পর আবার সিপিএমে যুব ও তরুণ নেতারা এতটা গুরুত্ব পাচ্ছেন।''

শুভাশিস ও আশিসের মতে, ''এই যুব নেতারা কত ভোট পাচ্ছেন সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হলো ভারতে সিপিএম নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা গুরুত্ব পাচ্ছেন। তারা নতুন আইডিয়া নিয়ে আসছেন। এর ফল ভবিষ্যতে দল পেতে পারে।''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ